অটোমোবাইল শিল্পে সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান

বারভিডার বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৫ অনুষ্ঠিত

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:০৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বারভিডার বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৫ অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)-এর বার্ষিক সাধারণ সভা ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল ৯ ডিসেম্বর রাতে রাজধানীর একটি ক্লাবে আয়োজিত এ সভায় সংগঠনের প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বারভিডা প্রেসিডেন্ট জনাব আবদুল হকের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল রিয়াজ রহমান, ভাইস প্রেসিডেন্টবৃন্দ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টবৃন্দ ও কার্যনির্বাহী সদস্যরা।

সভায় বারভিডা নেতৃবৃন্দ রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি খাতে স্থানীয় বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পসমূহের বিকাশ এবং সরকারের রাজস্ব কাঠামোয় এ খাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা তুলে ধরেন। তারা দেশের সার্বিক গাড়ি আমদানি বাণিজ্য এবং সরকারের অটোমোবাইল উন্নয়ন নীতিমালার আলোকে একটি সমন্বিত জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান।

সভাপতির বক্তব্যে বারভিডা প্রেসিডেন্ট জনাব আবদুল হক বলেন, গত চার দশক ধরে বারভিডা দেশের পরিবহন খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মানসম্পন্ন যানবাহন সরবরাহ করে আসছে। তিনি বলেন, রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি ব্যবসা শুধুমাত্র মুনাফাভিত্তিক নয়, এটি একটি সামাজিক ব্যবসা, যা দেশের মানুষের সক্ষমতা ও প্রয়োজন অনুযায়ী সাশ্রয়ী যানবাহন সরবরাহ করছে। আমদানিকৃত যানবাহনগুলো জাপানের অভ্যন্তরীণ উচ্চমানের মডেল হওয়ায় সেগুলো দেশে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক নীতির ফলে বিশ্ব বাণিজ্যে পরিবর্তন এসেছে, যা বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে নতুনভাবে প্রভাবিত করছে। ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে সতর্কতার সাথে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

বিশ্বব্যাপী গাড়ি শিল্পে গবেষণা, প্রযুক্তি এবং ভোক্তার পছন্দের পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, জ্বালানি সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। বাংলাদেশও ‘ইলেকট্রিক ভেহিকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে। তুলনামূলক কম শুল্ক কাঠামোর কারণে বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে শক্ত প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারে। এ পরিস্থিতিতে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি খাতের বিপুল বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং সরকারের রাজস্ব আহরণ বিবেচনায় ভারসাম্যমূলক ও সমন্বিত অটোমোবাইল নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।

সভায় সেক্রেটারি জেনারেল রিয়াজ রহমান ২০২৫ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। ট্রেজারার সংগঠনের আয়-ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেন। সভায় আগামী অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করা হয় এবং নতুন অডিটর নিয়োগ দেওয়া হয়।

সাধারণ সদস্যদের উন্মুক্ত আলোচনায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ি খাতের উন্নয়ন এবং সংগঠনের কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে বিভিন্ন মতামত উঠে আসে। তারা বারভিডাকে আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলতে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।

বারভিডা সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তথ্য:

  • সদস্য সংখ্যা: প্রায় ১৩ শতাধিক
  • স্থানীয় বিনিয়োগ: কয়েক হাজার কোটি টাকা
  • কর্মসংস্থান: সদস্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান
  • সরকারের রাজস্ব: বার্ষিক কয়েক হাজার কোটি টাকা
  • দেশের পরিবহন খাতে গাড়ি সরবরাহে অবদান: প্রায় ৮৫%
  • মোংলা বন্দর সচল করতে ২০০৯ সাল থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

বারভিডার নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, সমন্বিত জাতীয় নীতিমালা প্রণীত হলে দেশীয় অটোমোবাইল খাত আরও শক্তিশালী ও টেকসইভাবে এগিয়ে যাবে।


আমার বার্তা/এমই