রিটার্ন দাখিলের সময় বাকি মাত্র ১০ দিন, অনলাইনে জমার পদ্ধতি
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:১৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

নির্দিষ্ট কিছু করদাতা ছাড়া ব্যক্তিশ্রেণির সব করদাতাদের জন্য আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এবার ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের খবর জানিয়ে আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিতে হবে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে। এক্ষেত্রে সময় বাকি আছে আর মাত্র ১০ দিন।
সম্প্রতি আয়কর আইন, ২০২৩–এর ধারা ৩২৮ এর উপধারা (৪) অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। বিশেষ আদেশ নং–১/২০২৫ এর ক্রমিক নং–১ অনুসারে বিশেষ শ্রেণির করদাতা ছাড়া অন্য সব স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাকে পোর্টালের মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
বর্তমানে দেশের প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। করযোগ্য আয় থাকলে টিআইএনধারীদের রিটার্ন দিতে হয়। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ২০২৫-২০২৬ কর বর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য বিনীত অনুরোধ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
সব করদাতা ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন। তবে রিটার্ন জমা দেয়ার আগে প্রথমে করদাতাকে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধনের জন্য করদাতার নিজস্ব কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) এবং বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর প্রয়োজন হবে।
এই দু’টি তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেয়া যায়। অনলাইনে রিটার্ন জমা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তি রসিদ পাওয়া যাবে।
যেভাবে দেবেন
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন বা ই-রিটার্ন দিতে করদাতাকে কোনো কাগজপত্র আপলোড বা জমা দিতে হয় না। শুধু প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। যেমন, চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ব্যাংক হিসাবের এক বছরের লেনদেন বিবরণী (স্টেটমেন্ট) জমা দিলেই চলবে। অর্থবছর অনুযায়ী (আগের বছরের ১ জুলাই থেকে পরের বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত) ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, সুদের তথ্য, ব্যাংক হিসাব নম্বরসহ অন্যান্য তথ্য দিতে হবে।
কর দেবেন যেভাবে
করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্য কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর পরিশোধ করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য রাজস্ব বোর্ডের কল সেন্টার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা পাওয়া যাবে।
যেসব দলিলের তথ্য প্রয়োজন
রিটার্ন জমার সময় কিছু কাগজপত্রের তথ্য প্রয়োজন হয়। এসব তথ্য সরকারি ও বেসরকারি অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে- বেতন খাতের আয়ের দলিল, সিকিউরিটিজের ওপর সুদ আয়ের সনদ, ভাড়ার চুক্তিপত্র, পৌরকরের রসিদ, বন্ধকি ঋণের সুদের সনদ, মূলধনি সম্পদের বিক্রয় কিংবা ক্রয়মূল্যের চুক্তিপত্র ও রসিদ, মূলধনি ব্যয়ের আনুষঙ্গিক প্রমাণপত্র, শেয়ারের লভ্যাংশ পাওয়ার ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট, সুদের ওপর উৎসে কর কাটার সার্টিফিকেট।
তবে বিনিয়োগ করে কর রেয়াত পেতে চাইলে কিছু অতিরিক্ত কাগজপত্র লাগবে। যেমন-জীবনবিমার কিস্তির প্রিমিয়াম রসিদ, ভবিষ্য তহবিলে দেয়া চাঁদার সনদ, ঋণ বা ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারে বিনিয়োগের প্রমাণপত্র, ডিপোজিট পেনশন স্কিমে (ডিপিএস) চাঁদার সনদ, কল্যাণ তহবিলের চাঁদা ও গোষ্ঠী বিমার কিস্তির সনদ, জাকাত তহবিলে দেয়া চাঁদার সনদ।
উল্লেখ্য, গত করবর্ষে নির্দিষ্ট এলাকার আওতাধীন ব্যক্তি করদাতা, দেশের সব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হলে ১৭ লাখের বেশি করদাতা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেন।
আমার বার্তা/এল/এমই
