ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া টেকসই অর্থনীতি উন্নয়ন সম্ভব নয়
প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:১৭ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড সদস্য ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, অর্থনীতি ও রাজনীতি একসঙ্গে চলে এবং একে অপরের পরিপূরক।
তিনি বলেন, দুর্বল শাসন ব্যবস্থায় অর্থনীতি চলতে পারে না। সঠিক রাজনীতি ছাড়া সঠিক অর্থনীতি সম্ভব নয়। স্বল্পমেয়াদী সরকার দীর্ঘায়িত হলে তা অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক নয়, যা বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত করে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘ব্যাংক একীভূতকরণ : ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আর্থিক শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার প্রয়োজন। ঢালাওভাবে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ রাখা ঠিক নয়। কোনো বড় ধরনের বিচ্যুতি না থাকলে জব্দকৃত হিসাবগুলো খোলা উচিত। নাহলে সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, দারিদ্র্য এবং কর্মসংস্থানের ওপর বিরাট প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, গত এক বছরে অর্থনীতির কিছু সূচকের পতন ঠেকানো গেলেও সংকট কাটেনি এবং দারিদ্র্য কমেনি। ব্যাংকিং খাতে পূর্ববর্তী সরকারের সময় সুশাসন ছিল না, প্রতিটি সূচকেই অবনতি হয়েছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংক অনুমোদনের মাত্রা অর্থনীতির আকারের তুলনায় অনেক বেশি ছিল, যা পৃথিবীতে বিরল। পূর্ববর্তী সময়ে ব্যাংকগুলোকে নিজেদের সম্পদ বাড়ানোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার চেষ্টা করলেও প্রক্রিয়াটি জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ, যার কারণে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আওয়ামী সরকারের আমলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আর্থিক মাফিয়াদের অনৈতিক সুবিধা দিয়েছিল। ফলে দেশে মাফিয়া ইকোনমির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ভালো ব্যাংক লুণ্ঠিত হয়। এসব ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা শুধু আত্মসাৎই করা হয়নি, বিদেশেও পাচার করা হয়েছে। এর ফলে গ্রাহকরা উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত, তাদের আমানতের টাকা ফেরত পাবেন কি না তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, অনেক আমানতকারী চিকিৎসার খরচ মেটাতে টাকা তুলতে না পেরে মৃত্যুবরণও করেছেন। রাজনৈতিক কারণে দেওয়া ব্যাংকগুলোর মালিকরা অর্থ আত্মসাৎ করার পাশাপাশি ব্যাংকের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদও লুট করেছেন। বর্তমানে ৬ থেকে ৭ লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায় সম্ভব হচ্ছে না, কারণ মর্টগেজ রাখা সম্পত্তি ঝামেলাপূর্ণ হওয়ায় নিলামে বিক্রি করা যাচ্ছে না এবং অনেক সম্পত্তি প্রভাবশালীদের থাকার কারণে ক্রেতাও এগিয়ে আসছে না।
ছায়া সংসদে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ঢাকার বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সিনিয়র সাংবাদিক মাঈনুল আলম, প্রফেশনাল একাউন্টেন্ট আবুল বশির খান, সাংবাদিক মো. আলমগীর হোসেন এবং সাংবাদিক রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
আমার বার্তা/এল/এমই