শেয়ারবাজারে বড় উত্থান তবে লেনদেনের পরিমাণ কম
প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা/এল/এমই

টানা দুই কার্যদিবস বড় দরপতনের পর বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের উত্থান হয়েছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। মূলত শেষ ঘণ্টার লেনদেনের ওপর ভর করেই উভয় শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের দেখা মিলেছে।
এর আগে মঙ্গলবার ও বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়। দু’দিনে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৫৪ পয়েন্ট। এ পরিস্থিতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরুর অল্প সময়ের মধ্যেই দাম কমার তারিকায় চলে যায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। এতে আবারও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের।
তবে দুপুর ১টার পর বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় চলে আসে। শেষ ঘণ্টার লেনদেনে বাজারে ক্রেতাদের আধিক্য দেখা দেয়। বিপরীতে কমে বিক্রির চাপ। ফলে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম দিনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পাশাপাশি চলে আসে। এতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির। আর ৬৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৬২টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২৮টির দাম কমেছে এবং ৩৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৬৯টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৫টির দাম কমেছে এবং ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পঁচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৫১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯৪৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১৭১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সামিট এলায়েন্স পোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকার। ২২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে রবি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফরমেশন, সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, সোনালী পেপার এবং এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৮টির এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
আমার বার্তা অনলাইন: