দেশে ৮ হাজার কোটিপতি বেড়েছে এক বছরে

প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৩, ১২:৫২ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক

আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য, ডলার সংকট এবং রিজার্ভ পতনের পরেও দেশে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। গত এক বছরে এ সংখ্যা বেড়েছে ৭ হাজার ৯৭০টি। আর গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সকল কোটিপতিদের হিসাবে মোট জমা রয়েছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৭৬৪। এসব আমানতকারীর সঞ্চিতির পরিমাণ ১৫ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। আর মোট হিসাবের মধ্যে ১ কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে– এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। এসব হিসাবে জমা আছে ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। আর ২০২১ সালের একই সময়ে ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪টি হিসাবের মধ্যে কোটিপতি ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টি এবং সেখানে জমা ছিল ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮৫ কোটি টাকা।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংকের টাকা তুলে ব্যয় মেটাচ্ছেন অনেকে। কিন্তু একশ্রেণির মানুষের আয় বেড়েছে। এরা হচ্ছে বিত্তশালী।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একই প্রতিবেদন বলছে, ২০২০ এবং ২০১৯ সালে কোটি হিসাবের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৯৩ হাজার ৮৯০টি এবং ৮৩ হাজার ৮৩৯টি। সেই হিসাবে তিন বছরে কোটি হিসাবধারী বেড়েছে ২৬ হাজার ১০৭টি।

দেশে কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধি একটি ভালো দিক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক। তিনি বলেন, দেশের সম্পদ বৃদ্ধি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং মানুষের আয় বাড়লে তো কোটিপতি বাড়বে। পাশাপাশি ব্যাংকের অন্যান্য আমানতকারীও বৃদ্ধি পাবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। কোটিপতিদের হিসাবধারীর সংখ্যা ১৯৮০ সালে ৯৮, ১৯৯০ সালে ৯৪৩ এবং ১৯৯৬ সালে ছিল ২ হাজার ৫৯৪ জন। পরে তা বেড়ে ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭ এবং ২০০৮ সালে ১৯ হাজার ১৬৩ জনে উন্নীত হয়।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘এক দিকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে কোটিপতির সংখ্যা। এর মানে হলো, দেশে আয়বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। এটি অশুভ লক্ষণ। পাশাপাশি প্রতিবছর দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটি বন্ধ হলে কোটিপতির সংখ্যা আরও বাড়ত।’

এবি/ জিয়া