পুঁজিবাজারে ব্যাংকের জন্য বিশেষ ছাড়

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪:৪২ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের চলমান মন্দা পরিস্থিতির মধ্যে ব্যাংক খাতকে বড় ছাড় দিয়ে সীমাঅতিরিক্ত বিনিয়োগ সমন্বয়ে আরও একবছর সময় দিয়েছে কেন্দ্রীয়। বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল সোমবার যে নির্দেশনা জারি করেছে, তাতে বিনিয়োগ কমিয়ে সীমার নিচে আনতে ব্যাংকগুলো আগামী বছর ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, গত ৩১ আগস্টভিত্তিক হিসাবে যেসব ব্যাংকের পুঁজিবাজারে সীমার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে, সেসব ব্যাংক এ বিনিয়োগ সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী সাধারণত কোনো ব্যাংক তার মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। এক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে আরও কিছু হিসাব যুক্ত করা হয়। এ নিময় ভাঙলে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক। একাধিকবার নিয়ম লঙ্ঘনে প্রতিদিনের জন্য অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার সুযোগ রয়েছে।

এই বিনিয়োগ সীমা বা এক্সপোজারের ক্ষেত্রে আগে সিকিউরিটিজ অর্থাৎ কোম্পানির শেয়ার, করপোরেট বন্ড, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড ও পুঁজিবাজারের অন্যান্য নিদর্শনপত্রের বাজারমূল্যে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ হিসাব করা হতো। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের দাবির মুখে সেই নীতি পাল্টে গত আগস্টে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিটের হিসাব শেয়ারের ক্রয়মূল্যের ভিত্তিতে করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

তখনকার নির্দেশনায় বলা হয়, এখন থেকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ধারণকৃত শেয়ারের ক্রয়মূল্যকে ‘বাজারমূল্য’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। পুঁজিবাজারের যে কোনো নিদর্শনপত্রের বাজারমূল্য হিসাবায়নের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে মন্দাভাব চলছে। বেশিরভাগ শেয়ারের দাম নিয়ন্ত্রক সংস্থার বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে নেমে এসেছে। ফলে অনেক কোম্পানির লেনদেন বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বাজারে বড় ধরনের ক্রেতাসংকট দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শেয়ার বিক্রি করলে বাজারে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আবার ক্রেতা না থাকায় চাইলেও অধিক পরিমাণ শেয়ার বিক্রির সুযোগ নেই। এ কারণে পুঁজিবাজারের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক সীমার অতিরিক্ত শেয়ার সমন্বয়ের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আগামী বছর শেষে বা ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর মধ্যেই সেরকম ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ভোটও চাইছেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলারের দরবৃদ্ধির যৌথ প্রভাবে মূল্যস্ফীতির কষাঘাতে জর্জরিত মানুষ। এর সঙ্গে অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগসহ আর্থিক খাতের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে সরকার পুঁজিবাজার নিয়ে কড়াকড়ির ঝুঁকি না নিয়ে বিশেষ এই ছাড় দিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এবি/ জিয়া