২ লাখ কোটি টাকা ভ্যাট হারিয়েছে বাংলাদেশ: বিশ্বব্যাংক

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১০:০২ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

বিভিন্ন ধরনের ছাড় এবং আদায়ে দুর্বলতার কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। বিশ্বব্যাংকের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার অতিরিক্ত ভ্যাট আদায় করা সম্ভব ছিল। তবে ঐ বছর সরকার মাত্র ৮৫ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট সংগ্রহ করতে পেরেছিল। অর্থাৎ আদায়যোগ্য ভ্যাটের চেয়ে দুই-তৃতীয়াংশ কম ভ্যাট আদায় হয়েছে।

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট শীর্ষক প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। সেখানে ভ্যাট আদায় নিয়ে এই বিশ্লেষণ দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নীতিগত অবস্থানের কারণে ভ্যাট আদায়ে এমন ব্যবধান থাকছে। নীতি ও বিধিবিধান পরিপালনের ব্যবধান কমাতে পারলে অতিরিক্ত মূল্য সংযোজন কর আদায়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যেসব নীতি ও দুর্বলতার কারণে ভ্যাট আদায় হয়নি, তার মধ্যে রয়েছে বড় অঙ্কের ভ্যাট ছাড়, ভ্যাট আদায় পদ্ধতিতে ফাঁকফোকর থাকা, নিয়মের অপর্যাপ্ত প্রয়োগ প্রভৃতি। বিশ্বব্যাংক জানায়, ভ্যাট অবকাশ বন্ধ করা, সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করাসহ নিয়মনীতি পরিপালন করা গেলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২ লাখ ৮০ হাজার

কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করা যেত। কিন্তু ঐ বছর আদায় হয়েছে ৮৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ভ্যাট গ্যাপ বা সম্ভাবনা ও আদায়ের মধ্যে ঘাটতি ছিল প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। অন্যদিকে সরকার বিভিন্ন বিবেচনায় ভ্যাট আদায়ে ছাড় ও প্রণোদনা দেয়। এগুলো বিবেচনায় নিলে সম্ভাব্য ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ দাঁড়ায় দেড় লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই বিবেচনায়ও ভ্যাট আদায়ে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি থাকে। সাধারণত ব্যক্তি পর্যায়, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি খাতে বিভিন্ন পণ্য ও পরিষেবার সামগ্রিক ব্যয়ের ওপরে ভ্যাট আদায় করা হয়। সামগ্রিক ব্যয়ের মধ্যে ভোগ্যপণ্য, পরিষেবা থেকে শুরু করে বিনিয়োগ ও সরকারি ক্রয় সবই ধরা হয়।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, ভ্যাটের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ছাড়ের সুবিধা পায় দেশের কৃষি ও শিল্প খাত। সরকার সাধারণত দরিদ্রদের সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে ভ্যাট অব্যাহতি বা এর হার কমায়। তবে বিশ্বব্যাংকের মতে, বাংলাদেশে এই সুবিধার কারণে উচ্চ আয়ের উপার্জনকারীদের তুলনায় দরিদ্ররা বেশি উপকৃত হন বলে মনে হয় না। উল্লেখ্য, জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। আবার সময় সময় এসআরও জাারি করে এ নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট মওকুফ করে থাকে।