মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে অভিযানে গ্রেপ্তার ৪০

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

মাদক ও সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যখ্যাত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক কারবারি, বিক্রেতা, অস্ত্রের জোগানদাতা ও ককটেল সংরক্ষণকারীসহ ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ৮টি ককটেল, ২টি পেট্রোল বোমা, ৬টি সামুরাই, ৫টি হেলমেট, ৩টি ছুরি, ১১টি চোরাই মোবাইল ফোন এবং ৫০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।

রোববার বেলা ১২টার দিকে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান।

তিনি জানান, মোহাম্মদপুরের আলোচিত স্থান জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়। মাদকের বিস্তারের জন্য এলাকাটি বেশ পরিচিত। আমরা (পুলিশ) নিয়মিতভাবে এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার বিকেল থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত ১২০ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে আমরা মাদক কারবারি, মাদক বিক্রেতা, অস্ত্রের জোগানদাতা, ককটেল সংরক্ষণকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত ৪০ জনকে আটক করি।

তিনি আরও জানান, অভিযানে আমরা আটকদের কাছ থেকে ৮টি ককটেল উদ্ধার করি। যেগুলো পরে ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ডিফিউজ করে। এছাড়া দুটি পেট্রোল বোমা, ৬টি সামুরাই, ৫টি হেলমেট, ৩টি ছুরি, ১১টি চোরাই মোবাইল ফোন এবং ৫০০ গ্রাম হেরোইন তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়।

ডিসি বলেন, আটকদের মধ্যে অনেকে জেনেভা ক্যাম্পের মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেল, পিচ্চি রাজা, চুয়া সেলিমের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো অনেকের নাম উঠে এসেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করব। বিভিন্ন সময় জেনেভা ক্যাম্পে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সেজন্য ডিএমপি সদা তৎপর থাকবে।

জেনেভা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই তারা আবার জেল থেকে বেরিয়ে একই অপকর্মে জড়ায়। জেনেভা ক্যাম্পে মাদক কারবার নির্মূল করা যাচ্ছে না কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদক আমরা (পুলিশ) নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না। বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে আমরা মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে রাখি। আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আশা করি আমরা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছে যাব।

মোহাম্মদপুরে অপরাধ বাড়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর মোহাম্মদপুরে অপরাধের চরম বিস্ফোরণ ঘটেছে। যেসব অপরাধী বাইরে ছিল তারাও চলে এসেছে। অনেক অপরাধ সেখানে ঘটেছে। তারপর আমরা লাগাতার মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে আসছি। গত ৬-৭ মাসে আমরা ৩ হাজারের বেশি অপরাধীকে আইনের আওতায় এনেছি। আমরা চেষ্টা করেছি প্রতিদিন যেসব এলাকায় অপরাধীদের বিচরণ রয়েছে সেখানে অভিযান পরিচালনা করতে। এর ফলে বেশি অপরাধ হওয়া জায়গায় অপরাধ কমে গেছে। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আশা করি পরিস্থিতি আরো ভালো হবে।

জেনেভা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তার করে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই তারা আবার জেল থেকে বেরিয়ে একই অপকর্মে জড়ায়। জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা নির্মূল করা যাচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিসি ইবনে মিজান বলেন, মাদক আমরা (পুলিশ) নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, একেবারে নির্মূল করা সম্ভব না। বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে আমরা মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে রাখি।


আমার বার্তা/জেএইচ