জনদুর্ভোগে মির্জাপুর একাব্বর হোসেন জাতীয় মহাসড়ক

নজর নেই সওজের

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৩, ২০:২৬ | অনলাইন সংস্করণ

  মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পৌরসদরের লৌহজং সেতু,যা স্থানীয়দের কাছে বারই খাল সেতু নামেই পরিচিত। এই সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট, লাইট সবই আছে নেই শুধু আলো। জনসাধারণকে ঝুঁকি নিয়ে অন্ধকারে চলাচল করতে হয়। মাঝে মাঝে ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনা। আর জমে থাকা পানিতে বা রাতের অন্ধকারে প্রায়ই মানুষ দুর্ঘটনায় পতিত হয়।

২০১৯ সালের জুন মাসে ১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুতে ২০টি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা একাব্বর হোসেন সড়কের ৪ কিলোমিটারে মোট ১২৯ টি সড়ক বাতি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয় । কিন্তু বর্তমানে ১২৯ টির মধ্যে ৯০টি বাতিই বিকল, এমনকি সেতুর কোনোটিতেই বাতি জ্বলে না রাতে। 

বাতিগুলো বিকল হওয়ায় স্থানীয় ও পথচারীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। 

সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, চরপাড়া থেকে পুরাতন স্ট্যান্ড পর্যন্ত ৩০টি, পুরাতন স্ট্যান্ড থেকে সেতুর আগ পর্যন্ত ১৮টি, দেওহাটা থেকে গার্লস স্কুল এলাকা পর্যন্ত ২২টি এবং সেতুর ২০টির মধ্যে ২০টি সড়ক বাতিই বিকল। 

শুধু সড়ক বাতিই নয় ৩১ হাজার ২৫০ টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা একেকটি লাইট-ল্যাম্পপোস্টেও দেখা মিলেছে হেলে পড়ার দৃশ্য, জমেছে মরিচা। কয়েক বছরের ব্যবধানে এসব নষ্ট হওয়ায় এগুলোর মান নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সমাজের বিশিষ্টজন।

তথ্যসুত্রে জানা যায়, গত ২০১৯ সালে এ সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হয়। জুন মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ বুঝে নেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কাজ বুঝে নেয়ার প্রায় ৫ মাস পর এসব সড়ক বাতি সচল করা হয়। তার একবছর না পেরোতেই ৭৬টি সড়ক বাতি নষ্ট হয়ে যায়। স্থানীয় সংবাদকর্মীরা কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ করলে তারপর নামমাত্র কয়েকটি বাতি ঠিক করা হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বাতিগুলো নষ্ট হলেও কর্তৃপক্ষের নজরে আসে না।

অপরদিকে স্থানীয়রা সড়কের কাজের মান নিয়েও নানা প্রশ্ন তুলছেন। অল্প বৃষ্টি হলেই সড়কের দুপাশে জমে থাকে পানি। ড্রেন থাকলেও তা খুব বেশি কাজে লাগেনা বললেই চলে। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ময়লা ও দেবে যাওয়ায় পানি সড়কেই জমে থাকে, এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ জনগণকে। ড্রেনের ভিতরের অংশে ময়লা জমে থাকলেও তা যেনো দেখারও কেউ নেই।

পুষ্টকামুরী গ্রামের বাসিন্দা ভিপি আবু আহম্মেদ বলেন, লাইট না থাকার কারণে আমাদের চলাফেরায় খুব অসুবিধা হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো ঠিক করার আহবান জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।

পৌরসদরের পুষ্টকামুরী গ্রামের বাসিন্দা মো. খুসরু মিয়া বলেন, আমরা যখন বাসা থেকে বের হই রাস্তায় পানি জমে থাকার কারণে আমাদের চলাচলে খুব অসুবিধা হয়। মানুষ পানি এড়াতে অনেক সময় সড়কের মাঝখান দিয়ে হাটে, এতে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে। ড্রেন থাকলেও পানি নিষ্কাশন হয়না। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করি তারা যেনো এগুলো দ্রুত সমাধান করেন।

বাইমহাটি গ্রামের বাসিন্দা মো. কাইয়ুম খান বলেন, সড়কের বাতিগুলোর জন্য মানুষের চলাচলে অনেক বিঘ্ন ঘটে। বাহির থেকে আসা মানুষেরা রাতের বেলায় অনেক ধরণের অসুবিধার সম্মুখিন হয়। দ্রুত এগুলো মেরামত করা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর সড়ক উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সওজ) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন খান আমার বার্তার এই প্রতিবেদকে জানান, লাইটগুলি বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই অর্থ বছরে এই সড়কটির জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। আগামী অর্থ বছরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে যথাসম্ভব সবগুলো লাইট ঠিক করে দেয়া হবে। সড়কের বিভিন্নস্থানে দেবে যাওয়া ও পানি জমে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।


এবি/টিএ