মানিকগঞ্জ থেকে বিলুপ্ত ঘানি

প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ১৬:২৬ | অনলাইন সংস্করণ

  এস এ আলমগীর, মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জ থেকে হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তেল ভাঙ্গানোর ঘানি। এক সময় সরিষার তেল তৈরির একমাত্র মাধ্যম ছিল ঘানি। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই ঘানি দিয়ে সরিষা বা নারকেল থেকে তেল বের করা হতো। 

কালের বিবর্তনে গরুদিয়ে টানা ঘানি এখন কেবলই স্মৃতি। জেলার কোথাও এর অস্তিত্ব নেই। প্রায় সকল ঘানিই এখন ম্যাশিনে রূপান্তরিত হয়েছে।

সরেজমিনে মানিকগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় প্রতিটি মিলে ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিক শ্রমিকরা। কাজের ফাঁকে তারা জানান, যারা গরু দিয়ে ঘানির কাজ করতেন তারাই মূলত মেশিন ব্যবহার করে পুরানো পেশাকে ধরে রেখেছেন। 

মেসার্স আকালী ওয়েল মিলের মালিক হাজী মো: নজর আলী (৮৫) বলেন ঘানিই ছিল আমার বাপ দাদার আদি পেশা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও গরুর ঘানি চলেছে। আগে সারাদিনে মাত্র একমন সরিষা ভাঙ্গানো যতে। এখন মেশিন দিয়ে প্রতিদিন দশ বার মণ সরিাষা ভাঙ্গানো যায়। প্রতি মণ সরিষা ভাঙ্গাতে খরচ নেওয়া হয় ছয়শত টাকা। 

মো: দেলোয়ার হোসেন ও মো: আইয়ুব মিয়া বলেন, মানুষ এখন আর সময় অপচয় করতে চায় না। দোকানে এসেই ব্যস্ততা দেখান। যার কারণে দিনে দিনে ঘানি উঠে গেছে। আগে সর্বত্রই ঘানি দেখা যেত। এখন মানিকগঞ্জের কোথাও ঘানি নেই। তারা আরো বলেন, কাজ না থাকলেও গরুকে খাওয়াতে হয়। গরু রাখা পরিযর্চা করা এখন কঠিন। তাই মেশিন চলে এসেছে। ঘানি আর মেশিনে ভাঙ্গানো তেলের গুনাগুন ও স্বাদের তেমন পার্থক্য নেই। প্রতিদিন নারী পুরুষসহ সকল শ্রেণীর ক্রেতারা দোকানে এসে খাঁটি সরিষার তেল কিনে নিচ্ছেন। প্রতি কেজি সরিষার তেল বিক্রি হয় দুইশত ষাট টাকা। 

মানিকগঞ্জ শহর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুদ্দিন রেজা বলেন, মানিকগঞ্জে কোথাও ঘানি নেই। মেশিনে ভাঙ্গানো তেলও শতভাগ খাঁটি। এর স্বাদ ও গন্ধ ঘানি তেলের মতই।

এবি/ জিয়া