সাভারে ৫০ লাখ ১৭ হাজার টাকার জাল নোট ও তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেপ্তার ৩
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৩, ১০:৩০ | অনলাইন সংস্করণ
সাগর খান, সাভার
প্রিন্ট ভার্সন

গার্মেন্টস ব্যবসায় লোকসান হওয়ার ফলে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির ভিতর তৈরি করেছেন জাল টাকা, নিজের তৈরিকৃত সেই জাল টাকা দিয়ে বাজারে লিচু কিনতে গিয়ে আটক হন সাধারণ জনতার হাতে। পরবর্তীতে পুলিশ জানতে পেরে অভিযান চালায় সেই কারখানাতে।
সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নে এমনই এক অভিনব জাল টাকা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। পরে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে ৫০ লাখ ১৭ হাজার টাকা মূল্যমানের জাল নোট, বিপুল পরিমাণ জালটাকা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি, দুই বোতল বিদেশি মদ, এক ক্যান বিয়ার ও ১০০ পিস ইয়াবাসহ তিনজনকে আটক করা হয়।
বুধবার বেলা ১১টা থেকে সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নের সাধাপুরের পুরান বাড়ি এলাকার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে সাউথ বেঙ্গল এপারেলস গার্মেন্টস কারখানায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এই ঘটনায় মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় তারা হলেন- বরিশাল জেলার মুলাদী থানার ডিগ্রীরচর খান বাড়ির জয়নাল আবেদীন খানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন খান (৫০), শরিয়তপুর জেলার পালং থানার গয়াধর গ্রামের আল ইসলাম সরদারের ছেলে সুজন মিয়া (৩০) ও বরিশাল জেলার মুলাদী থানার বয়াতিকান্দি গ্রামের মানিক মোল্লার ছেলে নাজমুল হোসেন (২৪)।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী জানান দীর্ঘদিন ধরে আমরা জানি এখানে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে গার্মেন্টসের কাজ হয়, এখানে এই ধরনের একটি অনৈতিক ও অপরাধ মূলক কাজ হচ্ছে আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।
এদিকে অভিযুক্ত সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, গার্মেন্টস ব্যবসায় করোনা কালীন সময়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় এতে তিনি ব্যাংকের কাছে ৫-৭ কোটি টাকার মতো ঋণের বোঝায় পড়েন। এ সময় তিনি আরো বলেন পরবর্তীতে আমার এই আর্থিক সমস্যার সুযোগে গত চার মাস আগে এক সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুইজন লোক আমাকে জাল টাকা তৈরীর পরামর্শ দেয় এবং সার্বিক সহযোগিতা করে।
এ ব্যাপারে অভিযান শেষে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান পিপিএম-(বার) বলেন, আজ সকালে সাভারের অন্ধ মার্কেটের সামনে থেকে জাল টাকা দিয়ে লিচু কিনতে গেলে দোকানদারসহ স্থানীয়রা জাল নোট শনাক্ত করে ও একজনকে আটক করে সাভার থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে সাভার মডেল থানা পুলিশ আটক ব্যক্তিকে নিয়ে সাভারের বনগাঁওয়ের সাধাপুর পুরান বাড়ি এলাকায় ওই কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে সম্পূর্ণ প্রস্তুত ৫০ লাখ ১৭ হাজার নকল টাকা ও প্রিন্ট অবস্থায় আরও বিপুল পরিমাণের জাল টাকার সন্ধান পায়। পরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে কারখানার সব জাল টাকা উদ্ধার করে তিনজনকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসা বাদে অভিযুক্তরা আরো জানান সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ দুই তিন জনের সহযোগিতায় এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সে জড়িয়ে পড়ে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে গরুর হাটে এই জাল নোট ব্যবহার করতে চেয়েছিল তারা। এ বিষয়ে সাভার মডেল থানায় তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ সময় অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক উত্তর) আব্দুল্লাহিল কাফী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম এবং সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা সহ প্রায় অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা।
এবি/ওজি