কয়রায় ২৩ একর পাকা আমন ধান জোরপূর্বক কর্তনের হুমকি

প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:৪১ | অনলাইন সংস্করণ

  মোঃ আবু সাঈদ

খুলনার কয়রা উপজেলায় ২৩ একর জমির জিম্মাকৃত পাকা আমন ধান জোরপূর্বক কেটে নেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জমির মালিকরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় কয়রা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগীরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তালবাড়িয়া গ্রামের মৃত বঙ্গ বৈরাগীর পুত্র কালিপদ বৈরাগী। তিনি জানান, কয়রা উপজেলার হরিনগর মৌজার সি.এস ২৭ খতিয়ানে তাদের মোট ২৯ একর ৯১ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে ২৩ একর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছে। বিরোধে জড়িতরা হলেন তালবাড়িয়া গ্রামের তারাপদ বৈরাগীর পুত্র খগেন বৈরাগী, মৃত হরিপদ বৈরাগীর পুত্র পঞ্চরাম বৈরাগী ও সুধান্য বৈরাগী এবং মানিক বৈরাগীর পুত্র হরিদাস বৈরাগী ও অনাদি বৈরাগী।

কালিপদ বৈরাগী আরও বলেন, উক্ত জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলমান ছিল। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে দায়ের করা মামলায় তারা বৈধভাবে রায় প্রাপ্ত হন। আদালতের রায়ের আলোকে চলতি আমন মৌসুমে তারা নিজ খরচে জমিতে ধান রোপণ করেন এবং ধান বর্তমানে সম্পূর্ণ পাকার পর্যায়ে রয়েছে।

কিন্তু অভিযোগ করা হয়, বিরোধপূর্ণ পক্ষ আদালতের রায় অমান্য করে জোরপূর্বক ওই ধান কেটে নেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় নিজেদের ফসল রক্ষার জন্য তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৫ ধারায় মামলা (নং-২১৬/২৫) দায়ের করেন। আদালত কয়রা থানাকে ধান জিম্মায় রাখার নির্দেশ দিলেও তদন্ত প্রক্রিয়া একতরফাভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। পরবর্তীতে তারা আদালতে নারাজি আবেদন দাখিল করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও অভিযোগ করা হয়, প্রতিপক্ষ গোষ্ঠী প্রশাসনকে প্রভাবিত করার হুমকি দিচ্ছে এবং এলাকায় মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে। ধান কাটায় বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। এতে করে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, এই ধানই তাদের পরিবারের একমাত্র জীবিকা। জোরপূর্বক ধান কেটে নেওয়া হলে তারা মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই প্রকৃত জমি ও ফসলের মালিক হিসেবে আদালতের রায় বাস্তবায়ন এবং তাদের ধান নিরাপদে বুঝে পাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগীরা।