৪০০ বছর ধরে চাপ জমে আছে এক ফল্টে, তীব্র ঝুঁকিতে দুই জেলা
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

বাংলাদেশের নিচে ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও বার্মা—এই তিনটি টেকটোনিক প্লেটের স্থায়ী নড়াচড়ার ফলে দেশের ভৌগোলিক কাঠামো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ নড়াচড়ার প্রভাবে ডাউকি, মধুপুর ও সিলেট লাইনমেন্টসহ বেশ কয়েকটি সক্রিয় ফল্ট লাইন তৈরি হয়েছে। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পের সম্ভাব্য উৎস হলো মধুপুর ফল্ট।
গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, মধুপুর ফল্টে প্রায় ৪০০ বছর ধরে চাপ জমে আছে। এই চাপ হঠাৎ মুক্তি পেলে রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৮ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। রাজধানী ঢাকা এই ফল্ট থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হওয়ায় ঝুঁকি আরও বেশি। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, মাত্র ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও ঢাকার ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ ভবন ধসে পড়তে পারে।
২০০৭ সালে মধুপুর ফল্টের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে একটি সিসমোগ্রাফ স্থাপন করা হয়েছিল। তবে এখন সেই যন্ত্রের কোনো হদিস নেই। ফলে মধুপুর গড় ও আশপাশের ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার সঠিক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে না।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) নরসিংদী কেন্দ্রিক ভূমিকম্পে পুরো দেশ কেঁপে ওঠার পর মধুপুর এলাকায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার আগে থেকেই টাঙ্গাইলকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে উল্লেখ করলেও ভূমিকম্পের পূর্বাভাস জানা যায় না, যা তাদের অপ্রস্তুত রাখে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, সচেতনতা ও প্রস্তুতি বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, পরিকল্পিত নির্মাণ ও সঠিক তদারকি থাকলে ক্ষতি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
এমবিএসটিইউ-এর পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ জানান, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গেলে মধুপুর অঞ্চলে ভূমিকম্পজনিত ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এ বিষয়ে নতুন যন্ত্রপাতি আনার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের এক ভূমিকম্পে মধুপুরের অরণখোলা ইউনিয়নের বোকারবাইদ গ্রামে প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছিল। ফাটলের ব্যাস ছিল ৫–৬ ইঞ্চি এবং গভীরতা প্রায় ২৫–২৬ ফুট।
আমার বার্তা/জেএইচ
