তুলসীঘাট হাটে অতিরিক্ত হাসিল ও সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৩:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

অনিয়ম আর দুর্ভোগে জর্জরিত গাইবান্ধা সদরের ঐতিহ্যবাহী হাঁস-মুরগি ও কবুতরের তুলসীঘাট হাট। শুধু বিক্রেতার কাছ থেকে হাসিল আদায়ের নিয়ম থাকলেও ক্রেতার কাছ থেকেও আদায় করছেন ইজারাদাররা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হাটের সরকারি জমি দখল আর অবৈধ দোকান নির্মাণ। যা ভোগান্তি বাড়িয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী হাঁস-মুরগি ও কবুতরের হাট তুলসীঘাট হাট। প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবারের হাটবারসহ প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে। বেচাকেনা হয় হাঁস-মুরগি ও কবুতর।
দীর্ঘদিন ধরে এ হাট ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভরসাস্থল হলেও বর্তমানে নানা অনিয়ম আর দুর্ভোগে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। শুধু বিক্রেতাদের কাছ থেকে হাসিল নেয়ার নিয়ম থাকলেও ইজারাদার এখন ক্রেতাদের কাছ থেকেও আদায় করছে টাকা। ফলে জিনিসপত্র বেচাকেনা করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
উভয়ের কাছ থেকে হাসিল আদায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ স্থানীয়রা। হাটে আসা ক্রেতা সোহেল মিয়া জানান, দুই পক্ষের কাছ থেকে হাসিল আদায় নিয়ে অনিয়মের কথা বললেই ইজারাদারের লোকজনের কাছে উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়।
বিক্রেতা আনু মিয়া জানান, দুই পক্ষের কাছ থেকে তারা বাধ্য করে হাসিল আদায় করে। সামান্য দু-এক টাকা কম থাকলে হাঁস-মোরগ আটকিয়ে জোর করে টাকা আদায় করে। পাশাপাশি হাটের জায়গায় বিভিন্ন ঘড় তোলায় বসার জায়গা পর্যন্ত না থাকায় রাস্তায় বেচাকেনা করতে হয়।
শুধু হাসিল আদায় নয়, হাটের সরকারি জায়গা ও সেড দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ দোকান ঘর ও স্থাপনা। পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় হাঁস-মুরগি, কবুতরসহ নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে রাস্তার দু-পাশে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতার পাশাপাশি সাধারণ পথচারীরাও পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। অভিযোগ রয়েছে ইজারাদারের সঙ্গে মোটা অঙ্কের চুক্তির বিনিময়ে এসব করার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
সাহাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান সরকার জানান, প্রতিদিন ক্রেতা-বিক্রেতাসহ স্থানীয়রা এসব অভিযোগ করছেন। অতিরিক্ত হাসিল আর অবৈধ দখল তুলসীঘাট হাটের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে ঐতিহ্যবাহী এ হাট আরও সংকটে পড়বে।
ইউপি সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এক সময় যে পরিমাণ মানুষ এ হাটে আসতো, এসব কারণে এখন তা অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে। দ্রুত এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে হাটের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে হাটে গেলেও পাওয়া যায়নি ইজারাদারকে। তবে হাসিল তোলার দায়িত্বরত ব্যক্তিরা দু-একটি অনিয়ম করতে পারে বলে অভিযোগের বিষয়টি সঠিক নয় দাবি করেন হাট ইজারাদারের প্রতিনিধি মো. তাজুল ইসলাম।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহমুদ আল হাসান জানান, সরকারি জায়গা দখলের কোনো সুযোগ নেই। দ্রুত খোঁজ নিয়ে অতিরিক্ত হাসিল আদায় বন্ধসহ সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে হাটের পরিবেশ ফিরিয়ে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, চলিত বছর ১২ লাখ ২০ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য ইজারা দেয় উপজেলা প্রশাসন। ইজারা নেন ওই এলাকার শামসুল ইসলাম।
আমার বার্তা/এল/এমই