মব করে সাংবাদিক বাদলকে মারধর-হেনস্তা, নিউজ প্রত্যাহারের জন্য চাপ
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৪৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

রংপুরে ‘মব সৃষ্টি’ করে জ্যেষ্ঠ এক সাংবাদিককে তুলে নিয়ে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের কাচারিবাজার থেকে তুলে নিয়ে তাঁকে মারধর ও হেনস্তা করে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয় বলে অভিযোগ।
এ ঘটনা জানাজানির পর সিটি করপোরেশনে যান রংপুরে কর্মরত সাংবাদিকেরা। তাঁরা ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। জড়িত ব্যক্তিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অপসারণের দাবি জানান সাংবাদিকেরা।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম লিয়াকত আলী (বাদল)। তিনি একুশে টেলিভিশনের রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি এবং দৈনিক সংবাদের রংপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। তাঁর অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশের জেরে নগরের জাহাজ কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা এনায়েত আলীর (রকি) নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন মব সৃষ্টি করে তাঁকে তুলে নিয়ে হেনস্তা করেন। এ ঘটনায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শহিদুল ইসলাম এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা ইন্ধন দিয়েছেন।
লিয়াকত আলী অভিযোগ করে বলেন, ১৭ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংবাদে ‘রংপুরে জুলাই যোদ্ধাদের নামে অটোরিকশার লাইসেন্স, ৫ কোটি টাকা বাণিজ্যের পাঁয়তারা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন করেন তিনি। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কাচারিবাজার মোড়ে ছিলেন তিনি। তখন জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দেওয়া এনায়েত রকি ফোন করে তাঁর অবস্থান জেনে দলবল নিয়ে সেখানে যান। সেখানে মব তৈরি করে তাঁকে সিটি করপোরেশনে তুলে নিয়ে আসেন। ওই সময় তাঁর মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে এনায়েত আলী দাবি করেন, তিনি জুলাই আন্দোলনের একজন রাজবন্দী সৈনিক। তিনি উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমাদের কর্মসংস্থানের সুব্যবস্থার জন্য যদি সরকারি কোনো অর্থায়ন কেউ কোনো সাইড (দিক) দিয়ে করে, সেটাকে নিয়ে লেখালেখি করে জুলাই রাজবন্দীদের বা জুলাই নিয়ে বিকৃত করার কোনো দরকার কি কারও আছে?’ সাংবাদিককে হেনস্তার বিষয়ে তাঁর দাবি, তাঁকে আপসে নিয়ে আসা হয়েছে। কোনো অসম্মান করা হয়নি।
তবে সাংবাদিক লিয়াকত আলীর দাবি, এনায়েত আলীর নেতৃত্বে মব সৃষ্টিকারী দলটি তাঁকে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমার কক্ষের কাছে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান। তাঁকে জোর করে কক্ষে ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তখন তাঁরা তাঁকে ভুল স্বীকার করে সংবাদ প্রত্যাহার করতে বলেন।
অভিযোগের বিষয়ে উম্মে ফাতিমা বলেন, ‘রিপোর্টের কারণে মাফ চাওয়ার জন্য সাংবাদিকদের নিয়ে আসার প্রশ্নই ওঠে না। এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ।’ অন্যদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শহিদুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি ঢাকায় মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে পরে কথা বলতে চান।
রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় একজনের নাম আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে অন্যদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
আমার বার্তা/এমই