চলতি বছরেই চূড়ান্ত হচ্ছে ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি: নৌ উপদেষ্টা
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

দেশের স্থল, নৌ ও সমুদ্র বন্দসমূহের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি শীর্ষক একটি জাতীয় কৌশলপত্র তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
শনিবার (২০ সেপ্টেস্বর) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মিলনায়তনে আয়োজিত‘ ওয়ার্কশপ অন কাস্টমস এন্ড পোর্ট ম্যানেজমেন্ট : প্রবলেমস, প্রসপেক্টস এন্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাপোর্ট টু সাস্টেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্প (এসএসজিপি) ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— অর্থ মন্ত্রণালয়বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. ইউসুফ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান ও চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার নুসরাত সুলতানা।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী।
মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, ‘ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজির খসড়া প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি এই বছরের মধ্যেই এই স্ট্র্যাটেজি চূড়ান্তকরণের কাজ শেষ হবে।’ চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য সম্প্রতি বর্ধিত মাশুল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার উক্ত বর্ধিত মাশুল এক মাসের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নৌ উপদেষ্টা বলেন, আমদানি-রপ্তানিকৃত পচনশীল পণ্যদ্রব্য সংরক্ষণের জন্য সরকারের মোংলা বন্দরে একটি কোল্ড চেম্বার করার পরিকল্পনা রয়েছে। সঠিকভাবে সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে মোংলা বন্দরকে একটি আঞ্চলিক বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী সমুদ্র বন্দরসমূহের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজনদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য সম্প্রতি বর্ধিত মাশুল প্রসঙ্গে নৌ পরিবহণ সচিব বলেন, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের বিভিন্ন শর্তাবলি মেনে চলতে হবে। সমুদ্রবন্দসমূহের দক্ষতা বৃদ্ধি করতেও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগত খাতে প্রচুর বিনিয়োগ করতে হবে। বিনিয়োগের জন্য এই ধরনের মাশুল হতে প্রাপ্ত অর্থ ব্যবহৃত হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস. এম. মনিরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হলে যাতে বড় ধরনের কোনো সমস্যা না হয় ও বড় জাহাজ যাতে সহজে বন্দরে প্রবেশ করতে পারে সেই লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প একটি গভীর সমুদ্র বন্দর থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বন্দরে পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
কর্মশালার মূল বিষয়বস্তুর ওপর একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন সাবেক সচিব ও ইআরডি’র এসএসজিপি প্রকল্পের প্রকল্প উপদেষ্টা আবদুল বাকি।
আবদুল বাকি বন্দরে পণ্য চালানের সময় কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের অপারেটরসমূহ, বন্দর কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ কাস্টমস ও অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
কর্মশালায় প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য দেন— জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য ড. মো. আল আমিন প্রামানিক, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য কমোডোর আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ ও চৌধুরী গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (শিপিং) শাহেদ সারওয়ার। তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও কাস্টমসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াসমূহ পূর্ণ ও কার্যকররূপে স্বয়ংক্রিয়করণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন— ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব ও এসএসজিপি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ. এইচ. এম. জাহাঙ্গীর।
কর্মশালায় আলোচকবৃন্দ চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য সম্প্রতি আরোপিত বর্ধিত মাশুল পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান। সমুদ্র বন্দরের অফ ডকের ধারণক্ষমতা আরও বৃদ্ধির আহ্বানও জানান তারা।
আমার বার্তা/জেএইচ