গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় আটক ১৪, পরিস্থিতি থমথমে
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:১১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার জেরে গোপালগঞ্জে এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনার পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বুধবার রাতে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান। তবে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া কারফিউ বৃহস্পতিবার সকালেও বহাল রয়েছে। ভোরের পরও শহরে কোনো জনসাধারণের চলাচল কিংবা স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্যের দেখা মেলেনি। অধিকাংশ দোকানপাট ও বাজার বন্ধ। রাস্তাঘাট ছিল প্রায় জনশূন্য। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হননি।
যদিও শহরে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল দেখা যায়নি, তবে জেলা কারাগারের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল কড়াকড়ি।
বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এনসিপির কর্মসূচির আগে থেকেই উত্তেজনা তৈরি হয়। শহরের পৌর পার্কে সমাবেশ শুরুর আগেই পুলিশের গাড়িতে আগুন এবং ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পরে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান নামানো হয় এবং বিজিবির চার প্লাটুন মোতায়েন করা হয়।
সকালে টেকেরহাট ও উলপুরে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এরপর দুপুরে সমাবেশ মঞ্চেও হামলার ঘটনা ঘটে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে মাদারীপুরের দিকে রওনা দেওয়ার সময় লঞ্চঘাট এলাকায় ফের হামলার শিকার হন। এসময় হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ, গুলি, হাতবোমা, সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাসের শব্দে শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে, শহরের অনেক এলাকায় মানুষ দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়।
সংঘর্ষে নিহত চারজনের মরদেহ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। গুরুতর আহত তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিকেলে ১৪৪ ধারা জারি করে, কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যার পর জারি করা হয় কারফিউ। রাতভর পুরো শহর এক প্রকার ভুতুড়ে পরিবেশে পরিণত হয়। কিছু রিকশা চলাচল করলেও অন্য কোনো যানবাহনের দেখা মেলেনি।
আমার বার্তা/জেএইচ