টানা চারদিনের বৃষ্টিতে ডুবেছে নোয়াখালীর রাস্তাঘাট-ঘরবাড়ি
প্রকাশ : ০৮ জুলাই ২০২৫, ১৮:৩২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে টানা চারদিন ধরে নোয়াখালীতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টার টানা বর্ষণে আবারও পানিতে তলিয়ে গেছে জেলা শহর ও উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। কাঁচা ও আধা-পাকা সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও আবার কোমরপানি জমে জনজীবনে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ স্থবিরতা।
জানা গেছে, নোয়াখালী সদর, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, চাটখিল, কোম্পানীগঞ্জ ও সুবর্ণচরের বিভিন্ন অঞ্চলের নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে জেলা শহর মাইজদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, মৎস্য অফিস, জেলা খানা সড়ক, পাঁচ রাস্তার মোড়, পৌর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে।
এদিকে অনেক বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিসগামী লোকজনকেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে একাধিক শিশু জলকাদায় পড়ে আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃষ্টির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক দোকানপাটও।
জেলা শহরের বাসিন্দা আবু সাইদ নোমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পৌরসভা বা উপজেলা প্রশাসন। সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছরই সামান্য বৃষ্টিতেই এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বৃষ্টিতো দুইদিন , কিন্তু গত এক বছরেও প্রশাসনের পরিকল্পিত পদক্ষেপ নেই।
মাইজদীর আরেক বাসিন্দা আবু তাহের বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি, হালকা বৃষ্টিতেই নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। রিকশা-অটোরিকশা কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। রাস্তায় পানি জমে থাকায় কেউই চলাচল করতে চায় না। বাসা থেকে অফিসে পৌঁছাতে হিমশিম খেতে হয়েছে।
সুবর্ণচরের বাসিন্দা মাইন উদ্দিন বলেন, গতবারের মতো এবারও নোয়াখালীর সেইম অবস্থা বৃষ্টির পানির, এর কারণ কাল খনন না করা ও খালে বাঁধ দেওয়া। নোয়াখালীতে নেতার অভাব নাই, কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করার ইচ্ছে আগেও ছিল না, এখনো নাই। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হোক। তা না হলে প্রতি বছর বর্ষায় একই দুর্ভোগ পোহাতে হবে সাধারণ মানুষকে।
জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আরও ভারি বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টিপাত আগামী কয়েকদিন থাকতে পারে। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে শঙ্কা করছি।
নোয়াখালী পৌরসভার দায়িত্বে থাকা পৌর প্রশাসক জালাল উদ্দীন বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য কাজ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, বিভিন্ন এলাকা আমি ঘুরে দেখেছি। প্রধান সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি। তবে পাশের কিছু সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। আমরা জলাবদ্ধতা নিয়ে একাধিকবার বসেছি। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। জনগণের সহযোগিতাও প্রয়োজন।
আমার বার্তা/এমই