বরিশালে সাবেক মেয়রসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে দুদক

প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৮:০৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) দুদকের বরিশাল কার্যালয় থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত নথি এবং সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি চেয়ে ইতোমধ্যে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সাবেক সিটি মেয়রসহ অন্যান্যদের মধ্যে রয়েছেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা লকিতুল্লাহ, সাবেক সচিব মাছুমা আক্তার, উচ্ছেদ শাখার প্রধান স্বপন কুমার দাস, সার্ভেয়ার তাপস, নাছির, মশিউর, আর্কিটেক্ট সাইদুর, জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল, সম্পত্তি শাখার ফিরোজ ও মাহবুবুর রহমান শাকিল, প্ল্যান শাখার লোকমান ও কালটু, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মশিউর রহমান, বাজার সুপারিন্টেনডেন্ট নুরুল ইসলাম, ট্রেড লাইসেন্স সুপারিন্টেনডেন্ট আজিজুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী এইচএম কামাল ও সাইফুল ইসলাম মুরাদ ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

দুদকের পক্ষ থেকে উল্লিখিতদের নাম, পদবি, বিভাগ, স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য সংবলিত নথিপত্রের পাশাপাশি টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন নিয়োগ সংক্রান্ত রেকর্ড, সম্পত্তি ও অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত তথ্য, দীঘির মালিকানা ও বালু ভরাট সংক্রান্ত নথি, ঈদে ব্যানার তৈরির জন্য বরাদ্দকৃত ১৩ লাখ টাকার হিসাব, খোকন সেরনিয়াবাতের ফেসবুক পেজ বুস্টিংয়ের বরাদ্দকৃত ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার রেকর্ড, ল্যাপটপ, ড্রোন, ফার্নিচার, মনিটরসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার কেনাকাটার কাগজপত্র সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চাওয়া হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, কিছু কিছু নথি ইতোমধ্যে জমা পড়েছে। তবে অধিকাংশ এখনো মেলেনি। অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গ্রহণের জন্য পৃথক চিঠি পাঠানো হয়েছে। দুদকের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবুল কাইয়ুম হাওলাদারের স্বাক্ষরিত চিঠিতে এসব তথ্য জানা গেছে।

দুদকের পরিচালক মোজাহার আলী সর্দার জানান, সাবেক সিটি মেয়র ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ চলছে। তাই বিস্তারিত মন্তব্য করা যাচ্ছে না।

দুদকে দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের যৌথ কারসাজিতে বরিশাল সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করা হয়েছিল। নিয়োগে অনিয়ম, ঘুষ, সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ গ্রহণসহ নানা দুর্নীতি হয়েছে।

বিশেষভাবে অভিযুক্ত উচ্ছেদ শাখার প্রধান স্বপন কুমার দাস যিনি প্রকৃতপক্ষে পরিসংখ্যানবিদ ও সাবেক মেয়রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে দুর্নীতির মূল ভূমিকা পালন করেন। ২০২১ সালে বরিশালে সংঘর্ষ মামলার আসামিও তিনি। তার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

তবে স্বপন কুমার দাস, এসব অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেছেন, একটি মহল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

অপরদিকে জনসংযোগ কর্মকর্তা রোমেল বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে দুদকের একটি চিঠি পেয়েছি। দ্রুত প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়া হবে। তবে অন্যদের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।


আমার বার্তা/এমই