দিনে ৬ লাখ টাকা কর ফাঁকি দিচ্ছিল রয়্যাল টোব্যাকো, বন্ধ করে দিলেন ডিসি
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫, ১৮:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন গোদনাইল ঘাটে অবস্থিত রয়্যাল টোব্যাকো কোম্পানি প্রতিদিন প্রায় ছয় লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সিগারেট উৎপাদন করছিল। এভাবে প্রতিমাসে ২ কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছিল সরকার। প্রশাসনের নাকের ডকায় এই অবৈধ কার্যক্রম দীর্ঘদিন ধরে চললেও রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
গোপন সূত্রে বিষয়টি জানা মাত্রই নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা সোমবার সেখানে অভিযানের নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ পেয়েই অভিযানে নামে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তারিকুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী।
জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব, আনসার, ভোক্তা অধিকার ও কাস্টমসের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানকালে কারখানা থেকে ১৪ হাজার প্যাকেট সিগারেট এবং প্রায় ২১ লাখ টাকার রি-ইউজড স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এসব অবৈধ সামগ্রী তাৎক্ষণিকভাবে ধ্বংস করা হয়। এ ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রমের জন্য রয়েল টোব্যাকো কোম্পানিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং প্রতিষ্ঠানটির ভ্যাট অফিসারকে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৬২ ধারায় ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
র্যাব-১১-এর সিনিয়র এএসপি গোলাম মোর্শেদ অভিযান শেষে জানান, প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব ফাঁকি দিতে বাজার থেকে পুরোনো ব্যবহৃত স্ট্যাম্প কিনে নিয়ে সিগারেটের নতুন প্যাকেটে ব্যবহার করত। এতে প্রতিদিন আনুমানিক ৬ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিত। অভিযানে সিগারেট ও স্ট্যাম্পগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, রয়েল টোব্যাকো কোম্পানি ২০২১ সাল থেকে দৈনিক প্রায় ৬ লাখ টাকা অর্থাৎ মাসিক প্রায় ২ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল বলে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। তারা ৫০ শতাংশ নতুন স্ট্যাম্প এবং বাকি ৫০ শতাংশ পুরাতন ব্যবহৃত স্ট্যাম্প ব্যবহার করে সিগারেট বিক্রি করত।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন ২০২৩ সালে একই অভিযোগে এই ফ্যাক্টরিতে অভিযান পরিচালনা করে সিলগালা করেছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু মাত্র সাত দিন পরেই তারা পুনরায় কার্যক্রম শুরু করে স্থানীয় প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে।
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় কর ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না। সে যত প্রভাবশালী হোক না কেন। দুর্নীতি ও কর ফাঁকির বিরুদ্ধে আমরা জিহাদ ঘোষণা করেছি। তারই অংশ হিসেবে আমি রয়েল টোব্যাকো কোম্পানিকে সিলগালা করার নির্দেশ দিয়েছি। এ ধরনের অনিয়ম ও রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
আমার বার্তা/এমই