নোয়াখালীতে পুকুরে মিললো ১০ কেজি রুপালি ইলিশ

প্রকাশ : ২৭ মার্চ ২০২৪, ১৯:০৭ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক:

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার একটি পুকুরে মিলেছে ১০ কেজি রুপালি ইলিশ। প্রতিটি ইলিশের ওজন প্রায় ৫০০-৬০০ গ্রাম করে।

বুধবার (২৭ মার্চ) সকালে উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরে জাল ফেললে মাছগুলো ধরা পড়ে।

জানা যায়, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরটি ৪০টি পরিবার ব্যবহার করে। পুকুরটি লিজ নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মান্নান। বিশাল পুকুরে প্রায় সাত দিন ধরে সেচ দিয়ে পানি কমান তিনি। বুধবার সকালে পানি প্রায় কমে আসলে জেলেদের জাল দিয়ে মাছগুলো ওপরে তুলেন। এ সময় অন্যান্য মাছের সঙ্গে প্রায় ১০ কেজি রুপালি ইলিশ ধরা পড়ে। বিগত বছরেও এই পুকুরে ইলিশ মাছ পাওয়া গিয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২০২২ সালে প্রথম ধাপে ৩৫টি ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে। পরে আবারও পাওয়া যায়। এ বছর প্রথম ধাপে ১০ কেজি ইলিশ পাওয়া গেল। এটা সত্যিই আনন্দের। মাছগুলো দেখতে ভোর বেলায় মানুষের ভিড় জমে।

পুকুরের মালিক আবদুল মান্নান বলেন, প্রায় ৪০ পরিবার ‘যুগান্তর কিল্লা’ গুচ্ছ গ্রামের পুকুরটি ব্যবহার করে। প্রায় সাতদিন ধরে পুকুরটি সেচের জন্য মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে। আগামীকাল সেচের পুরো কাজ শেষ হবে। আজ পুরো পুকুরে জেলেদের দিয়ে জাল ফেলা হয়েছে। সে জালে অন্যান্য মাছের সঙ্গে ১০ কেজি ইলিশ ধরা পড়েছে। মাছগুলো ৫০০ গ্রাম থেকে ৬০০ গ্রামের মধ্যে।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় আসলে নিঝুমদ্বীপের প্রায় সবগুলো পুকুর তলিয়ে যায়। এর মধ্যে যুগান্তর কিল্লা পুকরটিও ছিল। সেখানে আবদুল মান্নান ২০২২ সালেও ৬ থেকে ৭ কেজি ইলিশ মাছ পেয়েছিলেন। এবার ১০ কেজি পেয়েছেন। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তখন ইলিশ পুকুরে এসেছে। পানি বের হতে না পারায় মাছগুলো নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, পুকুরে ইলিশ হয় বিষয়টি এমন নয়। মূলত জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় তখন ইলিশ পুকুরে এসেছে। নিঝুমদ্বীপ নিম্নাঞ্চল তাই জোয়ারে প্লাবিত হয়। পুকুরটি যখন প্লাবিত হয়েছে, তখন ইলিশ প্রবেশ করেছে। এ ছাড়া আলাদা কিছু এখানে নেই।

এ বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আনিসুজ্জামান বলেন,  ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। ইলিশ মাছ একটি বিচিত্র বৈশিষ্ট্যের মাছ। জোয়ারের পানি পুকুরে প্রবেশ করলে তখন নোনা পানির সঙ্গে ইলিশও প্রবেশ করতে পারে।

গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাদু পানিতে ইলিশ মাছ কম বাড়লেও একটা সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এটি লাভজনক নয়। এ ছাড়া স্বাদু পানিতে ইলিশের স্বাদ ও গন্ধ ঠিক থাকে না।


আমার বার্তা/এমই