সৌদীতে সড়ক দূর্ঘটনায় বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু, গ্রামজুড়ে শোকের মাতম

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮:৫৯ | অনলাইন সংস্করণ

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

পবিত্র ওমরা পালন করে নিজ কর্মস্থল কাতারে ফেরার পথে সৌদী আরবে মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারান মো. কবির মিয়া (৩৬)। নিহত কবির মিয়া  ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পাকশিমুল গ্রামের লাম্বাভিটা এলাকার কালা মিয়ার ছেলে। 

গত শনিবার সকালে সৌদী আরবের বর্ডার এলাকায় দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে মৃত্যুবরন করেন কবির। ওমরা পালন শেষে  তরতাজা যুবক কবিরের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে গোটা পাকশিমুল গ্রামজুড়ে চলছে শোকের মাতম। 

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়,  নিজ গ্রাম  পাকশিমুলের আলো বাতাসে বেড়ে ওঠা কবির পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর আশায় বাবা মা ভাই বোন স্ত্রী সন্তানকে রেখে পাড়ি দিয়েছিলেন কাতারে। ৭ ভাই ৩ বোনের মধ্যে কবির দ্বিতীয়। কাতারে তিনি ব্যবসা করতেন। স্বাচ্ছন্দ ফিরে এসেছিল পরিবারে। সকলে মিলে তারা সুখে শান্তিতেই ছিলেন। গত ৪-৫ বছর আগে বিয়ে করা কবিরের ঘরে রয়েছে  ৩ বছর বয়সের আকাশ নামের একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান। অতিসম্প্রতি কবির কাতার থেকে ওমরা করার জন্য সৌদী আরব যান। ওমরা শেষ করে ঘটনার দিন সকালে সৌদী আরব থেকে মাইক্রোতে করে ৫ বন্ধুসহ কবির কর্মস্থল কাতারের উদ্যেশ্যে রওনা দেন। সকাল বাংলাদেশ সময় আনুমানিক সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘঘটনায় তাদের বহনকারী মাইক্রো বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান কবির। বাকি ৫ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। ঘনিষ্ঠজনদের মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর আসে কবীরের বাড়িতে। 

কবিরের আকস্মিক মৃত্যুর সংবাদে পরিবার, স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা যেন থমকে গেছে। শোকে স্তদ্ধ হয়ে গেছে গোটা গ্রামসহ আশেপাশের এলাকা । সন্তানের অকাল মৃত্যুতে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন কবিরে পিতা ও  মাতা। বাকরূদ্ধ হয়ে বার বার জ্ঞান হারাচ্ছেন এক সন্তানের জননী কবিরের স্ত্রী উর্মি (২৭) । একমাত্র অবুঝ শিশু আকাশও যে ঠিকমতো  বুঝে উঠতে পারছেনা চির দিনের সে হারিয়েছে তার বাবাকে। 

কবীরের ভাই ও এলাকাবাসী জানায়, কবীর ছিলো খুবই শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির। তার এর মৃত্যুতে ছুটে আসা প্রায় সব মানুষের চোখেই বেদনার জল। কোন ভাবেই যেন থামছেনা শোকের মাতম।  

সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, আমরা এখনো সৌদীতে কবির মিয়ার মৃত্যুর ম্যাসেজ পায়নি। একই কথা বলেছেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন। তবে লাশ দাফনের ক্ষেত্রে তাদের পক্ষ থেকে কবীরের পরিবারের প্রতি সকল ধরনের  সহযোগীতা থাকবে বলে তিনি জানান।

এবি/টিএ