জবির সিন্ডিকেট থেকে আওয়ামীপন্থী শিক্ষক লাইসা আহমেদের পদত্যাগ
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫, ১৪:৪৫ | অনলাইন সংস্করণ
জবি প্রতিনিধি:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণি সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক ড.লাইসা আহমেদ লিসা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান রসায়ন ও অনুপ্রান বিভাগের শিক্ষক।
সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ তম সিন্ডিকেট সভার আমন্ত্রণে তিনি উপস্থিত হন। সভা শেষে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্যের নিকট তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।
জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৫ অনুযায়ী, সিন্ডিকেট সদস্য থাকবেন ১৬ জন। উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার সহ সরকার কর্তৃক মনোনীত নূন্যতম দুজন যুগ্ম সচিব, সরকার কর্তৃক মনোনীত শিক্ষা ও গবেষণা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান হতে দুজন, ইউজিসি থেকে ১ জন, আচার্য থেকে মনোনীত দুজন শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন থেকে তিনজন ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে তিন জন সিন্ডিকেট সদস্য হবেন।
সূত্র জানায়, আজকের সিন্ডিকেট সভায় আমন্ত্রণ পেয়েছেন উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. সানজিদা ফারহানা, লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাম হোসেন ও আইন অনুষদের ডিন খ্রিস্টিন রিচার্ডসন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. মো. মোশাররফ হোসেন, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মনিরুজ্জামান, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইসা আহমেদ লিসা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: ইলিয়াস হোসেন, জবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. রইছ উদ্দিন, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ সহ সরকার মনোনীত ২ জন যুগ্ম সচিব।
এদিন সিন্ডিকেট চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্লাটফর্ম 'জবি ঐক্য' এর নেতৃবৃন্দ এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিক স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। একই সাথে জবি ঐক্য থেকে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন ছাত্র নেতারা।
ছাত্র নেতাদের অভিযোগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম হলো সিন্ডিকেট। ফ্যাসিবাদের দোসরদের বাদ দিয়ে নতুন সিন্ডিকেট গঠন করার দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
এর মধ্যে অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন ২০২১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ পন্থী শিক্ষকদের হলুদ প্যানেল থেকে নির্বাচিত হন। তাঁর বিরুদ্ধে একাডেমিক সভায় অশালীন ভাষা ব্যবহার করে সহকর্মী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুনকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এ. কে. এম. মনিরুজ্জামান ২০১৫ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগসমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন নীলদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সমর্থনে ২০১৭ সালে জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন। আওয়ামীপন্থী শিক্ষক হওয়ায় ২০২৩ সালে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন।
আমার বার্তা/সাদিয়া সুলতানা রিমি/এমই