বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে আইএমএফ

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২২, ১৫:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ

  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক :

ফাইল ফটো

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার গেল এপ্রিলে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য করা প্রাক্কলন থেকে শুন্য দশমিক ৭ সতাংশ কমিয়ে ৬ শতাংশ করেছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত আইএমএফের বৈশ্বিক ইকোনোমিক আউটলুক প্রতিবেদনের সর্বশেষ সংস্করনে এটি দেখানো হয়েছে। এপ্রিলে আইএমএফ জানিয়েছিল, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৭ শতাংশ হতে পারে। তবে সর্বশেষ প্রতিবেদনে জ্বালানি ও খাদ্যের উচ্চমূল্য, মূল্যস্ফীতি, উচ্চ সুদের হার ও ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণ দেখিয়ে পূর্বাভাস সংশোধন করে ৬ শতাংশের কথা বলা হয়েছে।
আইএমএফ আরও জানায়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি গড়ে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে, যেখানে সরকারের বাজেট লক্ষ্য ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকও চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) পূর্বাভাসকে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশ করেছে। কারণ হিসেবে মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি স্বল্পতা, মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ধীরগতি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলেছে বিশ্বব্যাংক।
ইতোমধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) গত মাসে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ করেছে। তবে সরকারের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে।
দেশের কয়েকজন শীর্ষ অর্থনীতিবিদ এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়ে তাদের সন্দেহের কথা জানান। তাদের মতে, আইএমএফের সংশোধিত পূর্বাভাস অর্জন করাও বেশ কঠিন হবে।
পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআইবি) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর জানান, অর্থনীতিতে যে মন্দা চলছে, তার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের বিষয়টি আইএমএফের পূর্বাভাসে বিবেচনা করা হয়নি।
আইএমএফ ইকোনমিক রিভিউর সম্পাদক পিয়েরে-অলিভিয়ের গোরিঞ্চাস সতর্ক করেন, 'এখনো সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি আসেনি এবং অনেক মানুষই ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়বেন।'
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক শীর্ষ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হুসেন বলেন, '৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন হলেও সেটি অসাধারণ ঘটনা হবে। কারণ, ২০২৩ সালে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বে ২ দশমিক ৭ শতাংশ, এশিয়ার উন্নয়নশীল ও উদীয়মান দেশগুলোতে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১ দশমিক ৭ শতাংশ, মধ্যপ্রাচ্য ও কেন্দ্রীয় এশিয়ায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলোতে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ দেশের অর্থনীতিতে পরপর ২ ত্রৈমাসিক ধরে জিডিপি কমছে।'